Tuesday, November 15, 2016
জীবনের যেকোনো অবস্থা থেকেই কি জীবনের কার্যক্রম শুরু করা যায়? বয়স হয়ে গেছে এখন আমার দ্বারা হবে না। এটা কি সঠিক? জানুন
এটা মোটেই ঠিক নয়। আমরা যদি ইতিহাসের প্রখ্যাত মানুষদের জীবনী দেখি, আমরা দেখবো তাদের অনেকেরই জীবনের প্রথম অংশটা অনেক সাদামাটা। জীবনের অনেক পরে এসে বা অনেকে শেষ পর্যায়ে এসে খ্যাতি, প্রতিপত্তি, ক্ষমতা বা যে কাজের জন্যে তারা অমরত্ব লাভ করেছেন সে কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন।
যেমন, সাড়া জাগানো উপন্যাস রুটসের লেখক এলেক্স হ্যালি। ৪০ বছর মার্কিন কোস্ট গার্ডে খুব সাধারণ চাকরি শেষে অবসর গ্রহণের পর তিনি ভাবলেন, তার পূর্ব-পুরুষ-আফ্রিকা থেকে যাদের দাস হিসেবে জোর করে আমেরিকায় নিয়ে আসা হয়েছে সেই কালো মানুষদের ইতিহাস নিয়ে এখন একটি উপন্যাস লিখবেন। শুরু করলেন গবেষণা, ভ্রমণের কাজ।
সবকিছু শেষ করে ১৯৭৬ সালে ‘রুটস \ দ্যা সাগা অফ এন আমেরিকান ফ্যামিলি’ যখন প্রকাশিত হয় তখন তার বয়স ৫০ পেরিয়ে গেছে। সেলিব্রিটির খ্যাতি পেলেন তারও কয়েক বছর পরে যখন তা মিনি সিরিজ হিসেবে টেলিভিশনে প্রচারিত হলো, বিশ্বজুড়ে অনূদিত হলো অনেকগুলো ভাষায়।
আবার ইতিহাসের একজন ক্ষমতাধর মানুষের কথা ধরুন। ২১ বছর যখন তার বয়স তখন তিনি ব্যবসায়ে লস করলেন। ২২ বছর বয়সে আইনসভার নির্বাচনে পরাজিত হলেন। ২৪ বছর বয়সে আবারও ব্যবসায়ে লোকসান হলো। ২৬ বছর বয়সে হারান প্রিয়তমা স্ত্রীকে এবং ২৭ বছর বয়সে নার্ভাস ব্রেক-ডাউনের শিকার হন। ৩৪ বছর বয়সে আবারও কংগ্রেস নির্বাচনে পরাজিত হন, ৪৫ বছর বয়সে সিনেট নির্বাচনে পরাজিত হন এবং এর মাঝখানে ৩৭ বছর বয়সে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত হন এবং ৪৯ বছর বয়সে আবারও সিনেট নির্বাচনে পরাজিত হন।
অবশেষে ৫২ বছর বয়সে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এই মানুষটি হলেন আব্রাহাম লিংকন-গৃহযুদ্ধ এবং দাসপ্রথার অবসানের জন্যে যাকে আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে খ্যাতিমান প্রেসিডেন্ট হিসেবে গণ্য করা হয়। গেটিসবার্গে দেয়া তার বিখ্যাত ভাষণে-‘ডেমোক্রেসি ইজ বাই দি পিপল, অফ দি পিপল, ফর দি পিপল’-এ উক্তিটিকে বলা হয় পৃথিবীর ইতিহাসে গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে এ যাবৎকালে সবচেয়ে উদ্ধৃত উক্তি।
ইমাম আবু হানিফার কথা ধরুন। বর্তমান বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মুসলিম এখন হানাফী মাজহাবের অনুসারী। তাঁকে বলা হয় ইমামে আজম অর্থাৎ শ্রেষ্ঠতম ইমাম। অথচ শৈশবে তিনি কোনো পড়াশোনাই করেন নি। বাবার কাপড়ের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। একদিন তিনি যখন আল্লামা শাবীর বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন, শাবী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কার ছাত্র? আবু হানিফা জবাব দিলেন, আমি কারো ছাত্র নই। আমি পড়াশোনা করি নি। শাবী তখন বললেন, কিন্তু তোমার মধ্যে তো আমি বুদ্ধিদীপ্ততা দেখতে পাচ্ছি। তোমার উচিত জ্ঞানী লোকদের সংস্পর্শে থাকা। শাবীর এ বাক্যটিই আবু হানিফার জীবন পাল্টে দিলো। তিনি জ্ঞানসাধনায় ব্রতী হলেন। পরবর্তী জীবনের কথা তো আমরা সবাই জানি।
এঁরা যদি এত পরে জীবন শুরু করেও সফল হতে পারেন, খ্যাতিমান ও অমর হতে পারেন তাহলে আপনি কেন পারবেন না। অতএব জীবনে যেখানে আছেন সেখান থেকে শুরু করুন। যা আছে তা নিয়েই শুরু করুন। আপনি অবশ্যই যেখানে পৌঁছতে চান সেখানে যেতে পারবেন।
অগ্রক্রয় আইন এবং অগ্রক্রয় সংক্রান্ত আইনের বিধানাবলী
১। কোনো জমি কোনো ব্যক্তির নিকট বিক্রি হলে তা জানার আধিকার ৷
২। অগ্রক্রয়ের মামলা করার মাধ্যমে পুনরায় ঐ জমিটি ক্রয়ের অধিকার ৷
৩। অগ্রক্রয়ের মামলা করার জন্য বিক্রয়ের বিষয়টি জানার পর সময় পাবার অধিকার ৷
৪। অগ্রক্রয় মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়ার অধিকার ৷
৫। উত্তরাধিকার সূত্রে সহ শরীক হলে জমিটি অগ্রক্রয়ের ক্ষেত্রে সবার আগে সুযোগ পাবার অধিকার ৷
৬। অগ্রক্রয়ের মামলা হওয়ার পর নোটিশ জারীর পর অগ্রক্রয় মামলায় পক্ষভুক্ত হবার জন্য সময় পাবার অধিকার ৷
৭। ক্ষতিপূরণ পাবার অধিকার ৷
৮। অগ্রক্রয়ের মামলার মাধ্যমে ক্রয়কৃত জমিতে দখল পাবার এবং ভোগ করার অধিকার ৷
লঙ্ঘন
১। কোনো জমি বিক্রি হবার পর বিক্রয়ের বিষয়ে তথ্য গোপন করা বা না জানানো ।
২। পুনরায় জমিটি ক্রয় করার জন্য অথবা অগ্রক্রয়ের মামলা করতে বাধা দেওয়া ।
৩। অগ্রক্রয়ের মামলা করার জন্য সময় না পাওয়া ।
৪। অগ্রক্রয়ের মামলা হওয়ার পর নোটিশ পাবার সময় না দেওয়া ।
৫। নোটিশ পাবার পর অগ্রক্রয় মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য সুযোগ না দেওয়া ।
৬। মামলাকারী যদি উত্তরাধিকারী সূত্রে সহ-শরীক হয়ে থাকেন তাহলে তা বিবেচনা না করা ।
৭। অগ্রক্রয়ের মামলার ফলে জমিটি যদি মামলাকারীর অনুকুলে ক্রয়ের জন্য ডিক্রি প্রদান করা হয় তাহলে ১ম ক্রয়কারী ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ প্রদান না করা ।
৮। অগ্রক্রয় মামলা করার ফলে যদি অগ্রক্রয়কারী ব্যক্তি যদি পুনরায় ঐ জমিটি ক্রয়ের সুযোগ পায় তাহলে জমিটি ক্রয়ের পর দখল উক্ত জমিতে দখল না পাওয়া ।
প্রতিকার
১। অগ্রক্রয়ের মামলা করার জন্য আর্থিক এখতিয়ার সম্পন্ন দেওয়ানী আদালতে লিখিত আরজির সাথে উপযুক্ত কোর্ট ফি সংযুক্ত করে মামলা দায়ের করা যাবে ।
২। দেওয়ানী আদালত (যেমন সহকারী জজ আদালত, সিনিয়র সহকারী জজ আদালত) এর রায়ের ফলে কোনো ব্যক্তি অসন্তুষ্ট হলে তিনি জেলা জজের আদালতে আপিল করতে পারবেন
সালিশী ব্যবস্থার আইনগত ভিত্তি
সালিশী ব্যবস্থার আইনগত ভিত্তি ।
সালিশী ব্যবস্থা কোন সুষ্পষ্ট আইনের উপর প্রতিষ্টিত নয়। এটি একটি বিবাদ নিরসন মূলক সামাজিক ন্যায় বিচার প্রক্রিয়া। তবে বাংলাদেশে প্রচলিত কোন কোন আইনে সালিশী ব্যবস্থার উল্লেখ পাওয়া যায়। সল্প আইনীরীতি ও প্রতিষ্টিত প্রথা হিসেবে সালিশী ব্যবস্থা একটি শক্তিশালী সামাজিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে।
যে সকল আইনে সালিশী ব্যবস্থা সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে, তা হল:-
১। ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৩৪৫ ধারা মতে, কিছু কিছু অপরাধ আদালতের অনুমতি নিয়ে বা এমনিতেই সালিশী ব্যবস্থায় আপোস নিষ্পত্তি করা যাবে।
২। দেওয়ানী কার্যবিধি ১৯০৮ এর ৮৯(ক) ধারা মতে, পক্ষগণ সম্মত হলে দেওয়ানী আদালতে বিচারাধীন মামলা সংশ্লিষ্ট আদালতের অনমতি নিয়ে সালিশী ব্যবস্থায় নিষ্পত্তি করা যেতে পারে।
৩। পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ ১৯৮৫ এর ১০ ধারা মতে, পারিবারিক আদালতে বিচারাধীন তালাক, ভরণপোষণ, দেনমোহর, অভিভাবকত্ব ও দাম্পত্য জীবন পুণরূদ্ধার ইত্যাদি ৫টি বিষয়ে বিচারাধীন মামলার রায় ঘোষণার পূর্বে যে কোন সময়ে পক্ষগণ সালিশী ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে পারবে।
৪। মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ এর ৬ ধারা মতে, স্ত্রী বর্তমান থাকতে ২য় বিয়ে করতে সালিশী পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে
Subscribe to:
Comments (Atom)
